সিজিপিওয়াইতে অপ্রতিরোধ্য রেলের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ চুরি সিন্ডিকেট!

Posted by

সিজিপিওয়াইতে গড়ে ওঠা সংঘবদ্ধ একটি চক্র রেলের কোটি কোটি টাকার জ্বালানি তেল গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ লোপাট করছে। দেশের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী প্রায় প্রতিটি ট্রেন থেকে চুরি করা হয় জ্বালানি তেল। চট্টগ্রাম বন্দর ও পাহাড়তলীসহ দেশের প্রায় প্রতিটি লোকোশেডের পাশাপাশি ঘাটে ঘাটে চলে তেল চোরাকারবারিদের কর্মকান্ড।

শুধু তেল নয়, রেলওয়ের কোটি কোটি টাকার গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ লোহাসহ নানা সরঞ্জামও লোপাট করছে এই সংঘবদ্ধ চক্র। যারা লোকোশেড থেকে ট্রেনের নানা যন্ত্রাংশ লোপাট করে।কনডেম গাড়ী গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ চুরি অভিযোগ উঠেছে। এতে সরকারের লভের গুড় পিপঁড়ায় খেয়ে ফেলছে বলে মন্তব্য করছেন সচেতন মহল।বাংলাদেশ রেলওয়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ও রাষ্ট্র পরিচালিত রেল পরিবহন সংস্থা। এই সেবামুলক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিদিন সারা দেশে যাত্রী,পন্য ও জ্বালানি সরবরাহ করার জন্য বিএফসিটি, বিজি ওয়াগন, ট্যাংকার, টলি ব্যবহার করা হয়। এই গাড়ীগুলো ব্যবহারের একটি নির্ধারিত মেয়াদ থাকে। এই নির্ধারিত মেয়াদ যখন শেষ হয় তখন ব্যবহার অনুপযোগী হয় তখন সেটি কনডেম গাড়ী ( ব্যবহার অযোগ্য) হিসেবে পরিগনিত হয়। সেই হিসেবে সিজিপিওয়াই ইয়ার্ডে (চিটাগাং গুডস্ পোর্ট ইয়ার্ড) কনডেম গাড়ীগুলো রাখা হয়। গত ২-৩ বছরের মধ্যে এই ধরনের প্রায় ১১০০ শত কনডেম গাড়ী রেলওয়ের বিশেষ শর্ত সাপেক্ষে সিআরবি দপ্তর হতে নিলামে দেয়া হয় যাহা রেলওয়ের শর্ত মেনে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিলাম প্রাপ্ত হয়। নিলামে প্রাপ্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সিজিপিওয়াই ক্যারেজ এন্ড ওয়াগন ডিপোর এস এস এই/হেড টি এক্স আর এর মাধ্যমে কাটিং করতে হয়। কাটিংকৃত এই কনডেম গাড়ীগুলোতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ রয়েছে যেগুলো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা যাবেনা মর্মে নিলাম শর্তে উল্লেখ রয়েছে। কাটিং শেষে সেই সকল গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ রেলওয়ের স্টোর ডিপোতে জমা দেয়ার সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে যাতে ভবিষ্যতে এই সকল যন্ত্রাংশ অন্য গাড়ীতে প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়।তবে অভিযোগ রয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্মকর্তা সিজিপিওয়াই হেড টি এক্স আর শাহাদাত হোসেন আজাদ তার দুই সহযোগী রাশেদুল ইসলাম বাবলু খালাসি,মো: নুরউদ্দিন,খালাসি,সিন্ডিকেট মাধ্যমে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের চোখে ধুলো দিয়ে বিপুল অংকের টাকার বিনিময়ে ওইসকল যন্ত্রাংশগুলো ঠিকাদারিপ্রতিষ্ঠানকে দিয়ে দেওয়া অভিযোগ রয়েছে।

তারা রেজিস্টারে বুকে লিপিবদ্ধ করে গাড়ী নিলামে দেয়ার আগেই তা খোয়া গিয়েছে নোট করে রাখেন। এতে এই সিন্ডিকেটের পকেট ভারী হলেও জনগনের টাকায় চলা রেলওয়ে তথা রাষ্ট্র পড়ছে বিশাল অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে। তাছাড়া কোন গাড়ীর যন্ত্রাংশ যদি প্রয়োজন পড়ে তাহলে স্টোর কনডেম গাড়ী হতে প্রাপ্ত যন্ত্রাংশ দিয়ে হয়তো সেই প্রয়োজন মেটানো যেত, কিন্তু সিন্ডিকেটের জন্য রেলওয়ে এখানও ব্যর্থ। যার ফলশ্রুতিতে রেলওয়ে একটি যন্ত্রাংশের অভাবে পুরো গাড়ীটিকে ব্যবহার অনুপযোগী ঘোষনা করতে বাধ্য হচ্ছে।কাটিংকৃত গাড়ীর যেসকল যন্ত্রাংশ রেলওয়ের স্টোরে জমা প্রদান করার বিধান রয়েছে সেগুলো হল বিজি স্প্রীং, বাফার শ্যাংক, বাফার হেড, বাফার আউটার চকেট, বাফার ইনার চকেট, লিংক, ডোর স্ত্রীং, হুক বোল্ট, পিতলেন ব্রাশ, কাপলিং ব্লক, ইয়র্ক পিন, স্যাকল প্লেট, স্যাকল পিন, লিংক পিন, হুক বোল্ট নাট, স্কোর আয়রন, কাপলিং স্কু এক্সেল গার্ড।সকল যন্ত্রাংশের মধ্যে কিছু রয়েছে যেগুলো ইয়ার্ডে কনডেম গাড়ী রাখা অবস্থায়। চুরি হওয়া প্রায় অসম্ভব। এক্সেল গার্ড যা গাড়ীর চাকার সাথে রিভেট করা থাকে চকেট ইত্যাদি। এসকল যন্ত্রাংশ কাটিং ও মেজারমেন্টের দায়িত্ব থাকেন এই সিন্ডিকেটের দুইজন। ,সম্প্রতি ২৫০ টি ট্রলি কাটা হয় যার দায়িত্বে ছিল রাশেদুল ইসলাম বাবলু, নুরউদ্দিন।এ বিষয়ে জানতে চাইলে,সিজিপিওয়াই হেড টি এক্স আর শাহাদাত হোসেন আজাদ বলেন,আমি এখন একটু ব্যাস্ত আছি বিকালে অফিসে আসেন।জানতে চাইলে,রাশেদুল ইসলাম বাবলু বলেন,সঠিকভাবে সম্ভাব্যতা যাচাই করে দেখেন।এ অনিয়মের সাথে আমি জরিত নয়।বাংলাদেশ রেলওয়ে পুর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম ডিভিশনাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার/লোকো (ডিএমই) সাজিদ ইসলাম নির্ঝর বলেন,মোবাইলে একাধিকবার কল দিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

প্রিয় পাঠক— হেড টি এক্স আর শাহাদাত সিন্ডিকেটের আরও ফিরিস্তি দ্বিতীয় পর্ব আসছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *