কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল খুলে দেয়ার প্রথম এক মাসে পাড়ি দিয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার ১৩৬টি গাড়ি।গত এক মাসে আয় হয়েছে চার কোটি দুই লাখ দুই হাজার ৮৫০ টাকা। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্পের টোল ব্যবস্থাপক মো. বেলায়েত হোসেন। তিনি বলেন, ২৯ অক্টোবর সকাল ৬টা থেকে বঙ্গবন্ধু টানেল যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল।বুধবার (২৮ নভেম্বর) রাত ১২টা পর্যন্ত এক মাসে এক লাখ ৭৪ হাজার ৮৭১টি গাড়ি চলাচল করেছে। এই সময়ে টোল আদায় হয়েছে চার কোটি ১১ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে টোল আদায় হয় ১৩ লাখ ৭১ হাজার ২৭৪ টাকা।টানেলে গত এক মাসে গাড়ি চলাচল করেছে এক লাখ ৭৪ হাজার ৮৭১টি।প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বঙ্গবন্ধু টানেল দিয়ে দৈনিক ১৭ হাজার যানবাহন চলাচলের টার্গেট রয়েছে। তবে গত এক মাসে একদিনও ওই পরিমাণ গাড়ি পার হয়নি।এ টানেলটি মিরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বিশাল ভূখণ্ডকে অর্থনৈতিক করিডোরে রূপান্তরিত করবে বলে আশা করছেন বিনিয়োগকারীরা।সংশ্লিষ্টরা বলছেন চীনের সাংহাইয়ের মতো ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ মডেল অনুসরণ করে টানেলটি তৈরি করা হয়েছে।টানেলটি কর্ণফুলীর উত্তর প্রান্তে চট্টগ্রাম বন্দরনগরীকে নদীর দক্ষিণে আনোয়ারা উপজেলার সঙ্গে যুক্ত করেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, টানেলটি ঢাকা-চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কসহ এর দুই পাশের দুই বড় অর্থনৈতিক করিডোরকে যুক্ত করে চট্টগ্রামকে বিনিয়োগের কেন্দ্রস্থলে হিসেবে কাজ করবে।শুরুতে টানেল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল আট হাজার ৪৪৬ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা। পরে তা বৃদ্ধি পেয়ে ১০ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৪২ কোটিতে দাঁড়ায়। এর মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ সুদে ৫ হাজার ৯১৩ দশমিক ১৯ কোটি টাকা দিয়েছে। বাকি টাকা দেয় বাংলাদেশ সরকার।গত ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামের পতেঙ্গা প্রান্তে ফলক উন্মোচনের মধ্যে দিয়ে দেশের প্রথম টানেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর টোল দিয়ে টানেল পার হয়ে আনোয়ারা প্রান্তে আয়োজিত জনসভায় যোগ দেন তিনি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী নিজের গাড়ির জন্য ২০০ টাকা এবং বহরে থাকা ২০টি গাড়ির জন্য চার হাজার টাকা টোল দেন।টানেল পাড়ি দিতে প্রাইভেটকার ও পিকআপ ২০০, মাইক্রোবাস ২৫০, বাস (৩১ সিটের কম) ৩০০, বাস (৩২ সিটের বেশি) ৪০০, বাস (৩ এক্সেল) ৫০০, ট্রাক (৫ টন পর্যন্ত) ৪০০, ট্রাক (৫ দশমিক ০১ থেকে ৮ টন) ৫০০, ট্রাক (৮ দশমিক ০১ থেকে ১১ টন) ৬০০, ট্রাক ও ট্রেইলার (৩ এক্সেল) ৮০০, ট্রাক ও ট্রেইলারকে (৪ এক্সেল) এক হাজার টাকা টোল দিতে হয়। ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে টোল আদায় সম্পন্ন হচ্ছে। টোল আদায়ের জন্য ১২টি বুথ আছে।